শীতের এক রাতে ফরজের নামাজ শেষে ইব্রাহিম ওথমান যখন বাড়ি ফিরছেন তখন দেখেন মসজিদের পাশে এক নবজাতককে ফেলে গেছে। তিনি আর একা বাড়ি ফেরেন নি, সঙ্গে নিয়ে নেন সদ্য জন্ম নেওয়া এক মেয়েশিশুকে। স্ত্রীকে বলেন তোমার জন্য শিশুটিকে উপহার হিসেবে এনেছি।
শিশুটির নাম রাখেন হিবাতুল্লাহ। এর অর্থ ‘ঈশ্বরের উপহার’। পরিবারের সদস্য হিসেবে শিশুটিকে বড় করার সিদ্ধান্ত নেন ইব্রাহিম দম্পতি।
এমন অনেক নবজাতকের দেখা পাওয়া যায় সিরিয়ার মসজিদের সামনে, হাসপাতাল বা বাগানে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে এসব নবজাতকের ঠাঁই হয় না পরিবারে। ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ১২ বছরের যুদ্ধে সিরিয়ার মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে। হতাশা জেঁকে বসেছে তাদের। তাই অনেক পরিবার সন্তানদের লালনপালন করতে পারে না। ছোট অবস্থায়ই মসজিদ কিংবা হাসপাতালের সামনে ফেলে যায়।
ওয়াশিংটনভিত্তিক সংগঠন সিরিয়ানস ফর ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের শুরুর দিক থেকে গত বছরের শেষ পর্যন্ত সিরিয়ায় শতাধিক শিশুকে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য আছে। এর মধ্যে ৬২টি মেয়ে শিশু।
এদিকে বাশার আল-আসাদ এক ডিক্রিতে বলেছেন, ফেলে যাওয়া এসব শিশু আরব, মুসলিম ও সিরিয়ান হিসেবে পরিচিত হবে। এই পরিচয়ে তাদের সরকারিভাবে নথিবদ্ধ করতে হবে।
যুদ্ধের কারণে সিরিয়ায় একদিকে অস্থিতিশীলতা ও মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে, অন্যদিকে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দারিদ্র, বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি এবং বিয়ে ছাড়াই গর্ভধারণের ঘটনা। এসব কারণে অনেকেই নবজাতককে নিজের সঙ্গে রাখতে পারেন না।