বিশ্বের জনবহুল শহরগুলোর অন্যতম ইন্দোনেশিয়ার বর্তমান রাজধানী জাকার্তা। শহরটির বায়ুদূষণের মাত্রাও বিপজ্জনক। অস্বাভাবিক বায়ুদূষণ ও জনসংখ্যার চাপ কমাতে নতুন রাজধানী নির্মাণ করছে দেশটির সরকার। যার নাম নুসানতারা। তবে প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব এবং আদিবাসীদের বাস্তুচ্যুতির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
জাকার্তা থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে বোর্নিও দ্বীপে নির্মিত হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার নতুন রাজধানী, নুসানতারা। অত্যাধুনিক শহর গড়ে তুলতে সেখানে বন, উদ্যান, পরিবেশবান্ধব ভবন, নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করে খাদ্য উৎপাদন ও উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো সুবিধা রাখা হয়েছে। নিউইয়র্কের চেয়ে দ্বিগুণ শহরটি, ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হবে।
ভূমিকম্প প্রবণ, জনবহুল জাকার্তা শহর দ্রুত সাগরে তলিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরপরই, ২০২২ সালের মাঝামাঝি শুরু হয় নুসানতারা নির্মাণ। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শেষ হয়েছে ১৪ শতাংশ কাজ।
বোর্নিওর ঘন বনাঞ্চলে রাজধানী স্থানান্তর করায় অনেক গাছ কাটা পড়বে। অনেক প্রাণীর আবাস ও বিচরণস্থল হুমকিতে পড়বে বলে শঙ্কা পরিবেশবিদদের। শুধু তাই নয়, নিজেদের আবাস ও সংস্কৃতি বিলুপ্তের শঙ্কায় দ্বীপের আদিবাসীরাও।
অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ দ্বি সাউং বলেন, অ্যানিম্যাল করিডোরের মধ্যে নির্মাণকাজ শুরু করা ঠিক হয়নি। প্রথমে পশুদের স্থানান্তর করে, তারপর কাজ করা উচিত ছিল। তবে তাদের তাড়া ছিল, তাই এটি না করেই এলাকাটি তৈরি হচ্ছে।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা সিবুকদিন বলেন, আমাদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ন্যায্য মূল্য পাইনি। আমরা এই ছিটমহলে থাকতে চাই। অন্য কোথাও যেতে চাই না। আশা করি সরকার আমাদের প্রতি মনোযোগী হবে।
তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, দেশের কল্যাণেই এই অত্যাধুনিক শহর গড়ে তোলা হচ্ছে। তাই স্থানীয়দেরকে এর নির্মাণকালীন সাময়িক সমস্যা মেনে নেওয়ার আহ্বান সরকারের।
সরকারি কর্মকর্তা বামবাং সুসান্তো বলেন, আমরা শুধু একটি বসবাসযোগ্য শহর নয়, বরং আগামীর জন্য একটি স্ব-চালিত ও প্রাণবন্ত রাজধানী নির্মাণ করছি। আশা করছি, তাদের বোঝাতে পারবো যে জনস্বার্থে এটি করা হচ্ছে।
২০২৪ সালের ১৭ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতা দিবসে নতুন রাজধানী উদ্বোধনের পরিকল্পনা সরকারের। তবে এটি পুরোপুরি নির্মাণ হতে সময় লাগবে ২০৪৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত।
বি