বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন তিনি একটি এক্সিকিউটিভ অর্ডার সই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ৩০ হাজার শরণার্থীকে গুয়ান্তানামো বে জেলে পাঠানোর জন্য সেখানে শরণার্থী শিবির তৈরির নির্দেশ দেবেন তিনি।
সামরিক এবং নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়কে এই নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। এদিন আরেকটি শরণার্থী বিষয়ক আইনে সই করেছেন ট্রাম্প। যার নাম ল্যাকেন রিলে অ্যাক্ট।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, গুয়ান্তানামো বে জেলে যে শরণার্থী শিবির তৈরি করা হবে, সেখানে অপরাধপ্রবণ শরণার্থীদের রাখা হবে, যারা মার্কিন নাগরিকদের জন্য ভয়ের কারণ হতে পারে। বস্তুত, এই ব্যক্তিদের 'অবৈধ এলিয়েন' বলে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের কথায়, ''এই শরণার্থীদের মধ্যে কিছু লোক এত খারাপ যে তাদের আমরা কোনো দেশে ফেরতও পাঠাতে চাই না। কারণ, আমরা চাই না, তারা আবার ফিরে আসুক অ্যামেরিকায়।''
শরণার্থী নিয়ে ট্রাম্পের মনোভাব
২০২৪ সালে নির্বাচনী প্রচারে নেমেই শরণার্থী এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে কড়া মনোভাব দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প। জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
বস্তুত, ক্ষমতায় আসার পরেই একের পর বিতর্কিত এবং কড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ট্রাম্প। শরণার্থীদের নিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিমান বিভিন্ন উড়ে যাচ্ছে। শরণার্থীদের হাতকড়া পরিয়ে প্লেনে তোলা হচ্ছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলেও বহু শরণার্থীকে ডিপোর্ট করা হয়েছে। কিন্তু তাদের এভাবে সামরিক বিমানে হাত কড়া পরিয়ে পাঠানো হয়নি। ট্রাম্পের এবারের সিদ্ধান্ত বিশ্বজুড়ে আরো বিতর্ক সৃষ্টি করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
ট্রাম্প বলেছেন, গুয়েনতানামো বে জেলে যাদের পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে, তারা ভয়াবহ অপরাধী। অন্য দেশে ডিপোর্ট করলে তারা আবার ফিরে আসবে না এমন নিশ্চয়তা নেই। তা-ই তাদের গুয়ান্তানামো বে জেলে পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
বিতর্কিত গুয়ান্তানামো বে
৯/১১-র পর গুয়েনতানামো বে জেল তৈরি করা হয়েছিল। মূলত সন্ত্রাসীদের জন্য তৈরি সেই জেলে বহু মানুষকে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তখন থেকেই এই জেল নিয়ে নানা বিতর্ক। জেলের ভিতর নিপীড়নের বহু কাহিনি আছে। বারাক ওবামা জানিয়েছিলেন, ধীরে ধীরে এই জেল বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্ষমতা ছাড়ার আগে জো বাইডেন বেশ কিছু ব্যক্তিকে ওই জেল থেকে মুক্তি দিয়েছেন, এক যুগ কেটে গেলেও যাদের কোনো বিচার হয়নি। সেই জেলেই শরণার্থীদের রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন ট্রাম্প।