
বাংলাদেশ ব্যাংক
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ খেলাপি ঋণের রেকর্ড গড়েছে ব্যাংক খাত। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ২০.২ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আলোচ্য সময় শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণস্থিতি ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬০ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা
এর আগে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ ৬০ হাজার ৭৮৮ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২ লাখ কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গোপন থাকা খেলাপি ঋণের সঠিক তথ্য প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়ার পর এ বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ প্রকাশ্যে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের কাছে যতই নতুন তথ্য আসছে, ততই খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনর্গঠন করতে চাই। যেসব ব্যাংক একীভূত করার প্রয়োজন, সেগুলো একীভূত করব। প্রয়োজনে নতুন বিনিয়োগকারী এনে পুনর্গঠন করা হবে।’’
ব্যাংক খাত পুনর্গঠনের উদ্যোগ
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংক খাত পুনর্গঠনের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে আইনগত সংস্কার, ব্যাংক কোম্পানি আইন পর্যালোচনা ও দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণের পরিকল্পনা রয়েছে। গভর্নর জানান, এসব সংস্কার কার্যক্রম শেষ হলে ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।