
ইবাদত
আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, তিনি বান্দার প্রতি দয়াশীল ও ক্ষমাপ্রবণ। তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন এবং বান্দার জন্য ক্ষমার নানা অজুহাত খোঁজেন। কুরআনে এবং হাদিসে আল্লাহর ক্ষমা ও মাগফিরাতের অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে।
আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নামের মধ্যে অনেকগুলোর মাধ্যমে তাঁর ক্ষমাশীলতার গুণ প্রকাশিত হয়। তওবা, ইস্তিগফার, নেক আমল, আল্লাহর দয়া প্রার্থনা ও ভালো ধারণা রাখা—এসবই আল্লাহর মাগফিরাত লাভের মাধ্যম।
আল্লাহর কিছু ক্ষমাশীল নাম
১. আল-গাফুর (الْغَفُورُ) - পরম ক্ষমাশীল
আল্লাহ সব সময় গুনাহ মাফ করেন এবং তাঁর কাছে তওবা করলে তা কবুল করেন।
আল্লাহ বলেন:
“ওরা (যারা সৎকাজ করে) গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকে। কেউ ছোটখাটো দোষ করলে তোমার প্রতিপালকের তো ক্ষমার শেষ নেই।” (সুরা নজম: ৩২)
হাদিস:
“হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবীসমপরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো, আর আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করো, তাহলে আমি পৃথিবীসমপরিমাণ গুনাহও ক্ষমা করে দেব।”
২. আল-গাফফার (الْغَفَّارُ) - অতিশয় ক্ষমাশীল
তিনি সব সময় ক্ষমা করেন এবং বান্দার প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন।
আল্লাহ বলেন:
“আমি অবশ্যই তার জন্য ক্ষমাশীল, যে অনুতপ্ত হয়, বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকাজ করে এবং সৎপথে অবিচলিত থাকে।” (সুরা তাহা: ৮২)
৩. আত-তাওয়াব (التَّوَّابُ) - তওবা গ্রহণকারী
আল্লাহ বান্দার তওবা কবুল করেন এবং তার পাপ মোচন করেন।
আল্লাহ বলেন:
“তারপর আদম তার প্রতিপালকের কাছ থেকে কিছু বাণী পেল, তখন আল্লাহ তার প্রতি ক্ষমাপরবশ হলেন। তিনি তো ক্ষমাপরবশ, পরম দয়ালু।” (সুরা বাকারা: ৩৭)
ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন:
“আল্লাহ এমনভাবে তওবা গ্রহণ করেন যে, বান্দা তওবা করার আগেও তিনি তাকে তওবার সুযোগ করে দেন।”
৪. আল-আফুউ (الْعَفُوُ) - পাপ মোচনকারী
আল্লাহ অপরাধীকে তওবার সুযোগ দেন এবং তার পাপ মাফ করেন।
আল্লাহ বলেন:
“আল্লাহ তো পাপ মোচন করেন, ক্ষমা করেন।” (সুরা হজ: ৬০)
আল্লাহর পূর্ণ ক্ষমার বহিঃপ্রকাশ হলো, যে ব্যক্তি তওবা করে, আল্লাহ তার ছোট-বড় সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন। রমজান মাসে তাঁর ক্ষমা পাওয়ার মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালে সফলতা লাভ করা সম্ভব। তাই আমাদের উচিত আল্লাহর ক্ষমার দরজায় ফিরে যাওয়া এবং খাঁটি তওবার মাধ্যমে তাঁর অনুগ্রহ লাভ করা।