ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
১০ এপ্রিল ২০২৫

Advertisement
Advertisement

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে বিপাকে বাংলাদেশ, শুল্কছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠির উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১৪:৫৩, ৬ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৫:৩৩, ৭ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে বিপাকে বাংলাদেশ, শুল্কছাড়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠির উদ্যোগ

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত থাকার পরও দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের পণ্যে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমদানিকৃত কিছু পণ্যে শুল্কছাড়ের উদ্যোগ নিয়েছে, যার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর এবং চিকিৎসাসামগ্রী আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্কছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হবে। যেসব মার্কিন পণ্যে আগে থেকেই শুল্ক নেই, সেগুলো শুল্কমুক্ত রাখার নীতিও অব্যাহত থাকবে। একইসঙ্গে আগামী তিন মাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নতুন শুল্ক স্থগিত রাখার আহ্বান জানাবে বাংলাদেশ।

সভায় আরও জানানো হয়, শুল্কবাধা ছাড়াও অশুল্কবাধা দূরীকরণেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কটন আমদানিতে ফিউমিগেশন শর্ত বাতিল, সুতা গুদামজাত করার অনুমতি এবং কৃষি ও প্রযুক্তিপণ্য কেনায় অগ্রাধিকার। এছাড়া ফরচুন ৫০ তালিকাভুক্ত মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

বিডার ওই চিঠির খসড়ায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে সম্ভাব্য আমদানিযোগ্য চারটি পণ্যের তালিকা দেওয়া হয়েছে:

  • ক্যালসিয়াম কার্বনেট

  • তাজা বা হিমায়িত পশুর মৃতদেহ

  • হাড়সহ মাংসের হিমায়িত টুকরা

  • হাড়বিহীন তাজা ও হিমায়িত পশুর মাংস

বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই কিছু মার্কিন পণ্য, যেমন কটন, সয়াবিন, এলএনজি ও সমুদ্রগামী জাহাজ, শুল্কমুক্ত আমদানি করছে।

প্রসঙ্গত, ২ এপ্রিল ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের সব দেশের পণ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কসহ বিভিন্ন হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন, যা কার্যকর হবে ৯ এপ্রিল থেকে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য দরজা খোলা রেখেছে।

বৈঠকে অংশ নেওয়া বিভিন্ন শিল্প-ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেছেন, নতুন শুল্কের ফলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা চাপে পড়তে পারেন, কারণ ক্রেতারা এই শুল্কভার তাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চাইছেন। যদিও কিছু উপদেষ্টা মনে করছেন, সঠিক কৌশলে বাংলাদেশ এ পরিস্থিতিকে নিজের পক্ষে কাজে লাগাতে পারে। তবে স্বীকার করা হয়েছে, ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো আগাম প্রস্তুতি বাংলাদেশের ছিল না।

প্রথম আলোর এক অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানির গড় শুল্কহার ছিল ৬.১৫ শতাংশ। তবে অগ্রিম করসমূহ বাদ দিলে কার্যত তা দাঁড়ায় মাত্র ২.২০ শতাংশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বাংলাদেশ তাদের পণ্যে গড়ে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যার মধ্যে রয়েছে প্রত্যক্ষ শুল্ক, অশুল্ক বাধা, মুদ্রার বিনিময় হার এবং বাণিজ্যনীতি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি রুবানা হক, এলজিএফইএবি’র সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি শামীম এহসানসহ আরও অনেকে।

চিঠির খসড়া প্রণয়ন শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531