
শ্রমিক
সরকারি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জরুরি প্রয়োজনে দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগের সুযোগ করে দিয়ে “দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫” জারি করেছে অর্থ বিভাগ। ১৫ এপ্রিল অর্থ সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারের স্বাক্ষরে এ নীতিমালা প্রকাশিত হয় এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে।
এই নীতিমালার আওতায় সরকারী দপ্তরগুলো অস্থায়ী জরুরি কাজের জন্য দৈনিক ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ দিতে পারবে। তবে এ নিয়োগ শুধুমাত্র সময়সীমাবদ্ধ কার্য সম্পাদনের জন্য প্রযোজ্য হবে। জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক, যাদের বয়স ১৮ থেকে ৫৮ বছরের মধ্যে এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম, তারাই এই নিয়োগের যোগ্য হবেন।
শ্রমিক নিয়োগের শর্তাবলি ও প্রক্রিয়া:
-
বয়স যাচাইয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক।
-
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা গণ্যমান্য ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত স্বভাব ও সামাজিক আচরণের ইতিবাচক প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে।
-
মাসে সর্বোচ্চ ২২ দিন পর্যন্ত একজন শ্রমিককে নিয়োগ দেওয়া যাবে।
-
কোনো নতুন পদ সৃজন করা যাবে না এবং অনুমোদিত শূন্য বা নিয়মিত পদের বিপরীতে শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না।
-
নারী, পুরুষ ও তৃতীয় লিঙ্গের মধ্যে মজুরির ক্ষেত্রে কোনো বৈষম্য রাখা যাবে না।
মজুরি প্রদান পদ্ধতি:
-
মজুরি হবে অর্থ বিভাগের নির্ধারিত হারে এবং শুধুমাত্র নির্ধারিত পারিশ্রমিক ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা প্রদান করা যাবে না।
-
মজুরি প্রদান করতে হবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে।
-
প্রত্যেক নিয়োগপ্রাপ্ত শ্রমিকের তথ্য ও অর্থনৈতিক লেনদেনের বিবরণ ডিজিটাল ডাটাবেজে সংরক্ষণ করতে হবে।
নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ:
নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিয়োজিত শ্রমিকদের জন্য একটি নিরাপদ, শোভন এবং নারী-বান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশগত প্রভাবও বিবেচনায় নিতে হবে যাতে নিয়োগকালে প্রকৃতির ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে।
নীতিমালার আওতাভুক্ত নয় এমন ক্ষেত্র:
-
কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর আওতায় গঠিত রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো।
-
সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৮৬০-এর আওতায় গঠিত প্রতিষ্ঠানগুলো।
-
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এবং শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ প্রযোজ্য এমন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত শ্রমিকরা।
বিশেষ ব্যতিক্রমের ক্ষেত্রে:
নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগের প্রয়োজন হলে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিতে হবে।
এই নীতিমালাটি সরকারের কাজের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং অস্থায়ী জরুরি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বাস্তবায়নে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও সমন্বয়ের বিষয়গুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে বলে উল্লেখ রয়েছে।