
ভারত বাংলাদেশ
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করলেও ভারতের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বার্তা এসেছে—বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না তারা। ভারতের সরকারি একাধিক সূত্র এমন বার্তা দিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশ বাণিজ্যিকভাবে কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেও, দিল্লি তাতে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটবে না। ভারতের সরকারি সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, নিজেদের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের চাপ কমাতেই বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। তবে নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে আশ্বস্ত করেছে ভারত সরকার।
উল্লেখ্য, ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যমে সম্প্রতি দাবি করা হয়েছিল, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল (সেভেন সিস্টার্স) নিয়ে মন্তব্য করার জেরেই এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করা হয়। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন বলছে, এর আগেই বাংলাদেশ গত মার্চে তিনটি সমুদ্রবন্দর বন্ধের ঘোষণা দেয় এবং স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা বাংলাদেশে জারি হয়েছে চলতি এপ্রিলের শুরুতে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউজে বাংলাদেশ যে বাড়তি সতর্কতা আরোপ করে, সেটিও ভারত মনে করছে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টির অংশ।
সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দাবি এসেছে প্রতিবেদনটির শেষ দিকে। সেখানে বলা হয়েছে, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে—ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে সঙ্কট তৈরি করে বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকছে। এর প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান ট্রেডিং কর্পোরেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানির বিষয়টি।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লির শান্ত বার্তা ইঙ্গিত দিচ্ছে, রাজনৈতিক উত্তাপ থাকলেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক একপাক্ষিক সিদ্ধান্তে আরও তলানিতে না গিয়ে, বরং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের দিকে এগোতে চায় ভারত।