ঢাকা,  শনিবার
২৬ এপ্রিল ২০২৫

Advertisement
Advertisement

বাংলাদেশের বাঁধ পুনর্নির্মাণে ভারতের ত্রিপুরায় বাড়ছে জলাবদ্ধতার শঙ্কা

প্রকাশিত: ১৫:০৭, ২২ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৯:০৮, ২২ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশের বাঁধ পুনর্নির্মাণে ভারতের ত্রিপুরায় বাড়ছে জলাবদ্ধতার শঙ্কা

বাঁধ

বর্ষা মৌসুম শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ, বাংলাদেশের অংশে শক্তিশালী ও উচ্চতর বাঁধ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে, যা দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বন্যা এবং জলাবদ্ধতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জনপ্রতিনিধিরা।

দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া বিধানসভা আসনের সিপিআইএম বিধায়ক দীপঙ্কর সেন গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অর্থে নির্মিত এই বাঁধ আন্তর্জাতিক নিয়মের তোয়াক্কা না করেই সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যেই নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এর উচ্চতাও দ্বিগুণ করা হয়েছে। তিনি সরেজমিনে গিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন, বাংলাদেশ অংশের কালিকাপুর এলাকায় এই বাঁধ নির্মাণ কাজ চলছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার ত্রিপুরা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শন করেন। বিলোনিয়া ও আশেপাশের অঞ্চলে পানির স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

বিধায়ক দীপঙ্কর সেন জানান, জলনিষ্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে খাল কেটে শহরের বাইরে পানি বের করে দেওয়া সম্ভব হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত আসেনি। তিনি বলেন, “দেখা যাক সরকার কী পদক্ষেপ নেয়।”

পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের সচিব কিরণ গীত্বর বলেন, “গত বছর দক্ষিণ ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যায় অনেক বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যার মেরামতের কাজ চলছে এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে তা শেষ করা হবে।” তিনি বাংলাদেশের বাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিলোনিয়া পৌরসভার প্রধান নিখিল চন্দ্র গোপ বলেছেন, ভারতের অংশেও বাঁধের উচ্চতা এক থেকে দুই মিটার পর্যন্ত বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে শহরকে সুরক্ষিত রাখা যায়।

গত বছরের বন্যায় ত্রিপুরায় ১৭ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং প্রাণ হারান অন্তত ৩৮ জন। সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশের ফেনীসহ একাধিক জেলাতে মারা যান ৬০ জনের বেশি মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হন ৫০ লাখেরও বেশি। সেই প্রেক্ষাপটে ফেনীর বল্লামুখা বাঁধ পুনর্নির্মাণ করছে বাংলাদেশ, যার ৪০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে এবং বিজিবি’র তত্ত্বাবধানে তা চলমান।

সীমান্তবর্তী জনগণের মতে, তারা আগেই স্থানীয় প্রশাসনকে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে সতর্ক করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন বাংলাদেশে কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে, ফলে ভারতের সীমান্তবর্তী জনপদগুলো নতুন করে হুমকির মুখে পড়তে পারে।

উত্তর ত্রিপুরার উনকোটি জেলার বিধায়ক বীরজিৎ সিনহাও জানুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অনুরূপ আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন।

? সার্বিকভাবে:

এই পরিস্থিতি ভারত-বাংলাদেশ জলসম্পদ ব্যবস্থাপনার যৌথ কাঠামোর কার্যকারিতা, আন্তর্জাতিক চুক্তির মান্যতা এবং সীমান্তবর্তী জনগণের নিরাপত্তা—এই তিনটি বড় প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531