ঢাকা,  শনিবার
২৬ এপ্রিল ২০২৫

Advertisement
Advertisement

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ: স্বাস্থ্যঝুঁকির নীরব বিস্ফোরণ

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৬:৫০, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ: স্বাস্থ্যঝুঁকির নীরব বিস্ফোরণ

অ্যান্টিবায়োটিক

বর্তমান বিশ্বে একটি অদৃশ্য অথচ অত্যন্ত ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে উঠেছে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ। এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে ব্যাকটেরিয়া আর অ্যান্টিবায়োটিকের প্রভাবকে পরোয়া করে না। একসময় যেসব ওষুধ সহজেই সংক্রমণ নিরাময় করতো, আজ সেসব ওষুধ ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে সাধারণ ঠান্ডা, সর্দি কিংবা সংক্রমণ জটিল রূপ নিচ্ছে এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে।

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের মূল কারণসমূহ

১. অতিরিক্ত ও ভুলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার

অনেকেই সর্দি, কাশি বা ভাইরাল সংক্রমণের মতো ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয়ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন। আবার কেউ কেউ নিজের ইচ্ছেমতো কিংবা পুরোনো প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করে ওষুধ খেতে শুরু করেন এবং সম্পূর্ণ কোর্স শেষ না করেই বন্ধ করে দেন। এতে ব্যাকটেরিয়াগুলোর মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।

২. পশু খাতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার

গবাদিপশু এবং হাঁস-মুরগির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধের অবশিষ্টাংশ খাদ্য চেইনের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার প্রতিরোধশক্তি বাড়ায়।

৩. অস্বাস্থ্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি

হাসপাতাল বা ক্লিনিকের সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত না রাখা, একাধিকবার একই সিরিঞ্জ বা চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহার করা—এসব থেকে সংক্রমণ ছড়ায় এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের পরিস্থিতি তৈরি হয়।

৪. অপ্রয়োজনীয় প্রেসক্রিপশন

অনেক চিকিৎসক রোগ নির্ণয়ে টেস্ট না করেই উপসর্গের উপর ভিত্তি করে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দেন। এটি রোগ নিরাময়ে ব্যর্থতা আনতে পারে এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

৫. নিম্নমানের ওষুধ

বাজারে পাওয়া ভেজাল বা নিম্নমানের অ্যান্টিবায়োটিক ঠিকমতো কাজ না করায় ব্যাকটেরিয়া সহজেই অভিযোজিত হয়ে পড়ে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।

৬. জনসচেতনতার অভাব

অনেকে জানেন না কেন পুরো ওষুধ কোর্স শেষ করা দরকার বা কখন অ্যান্টিবায়োটিক নেওয়া উচিত। ফলে ওষুধ মাঝপথে বন্ধ করা বা ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়।

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের পরিণতি

  • সাধারণ সংক্রমণ যেমন মূত্রনালির সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, টিউবারকুলোসিস ইত্যাদি জটিল হয়ে পড়ে

  • হাসপাতালের সংক্রমণ হার বেড়ে যায়

  • অস্ত্রোপচার ও ক্যানসার চিকিৎসার সময় সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়

  • চিকিৎসার ব্যয়, সময় এবং জটিলতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়

প্রতিরোধে করণীয়

  • অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে

  • শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে

  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করতে হবে

  • পশু খাতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে

  • রোগ নির্ণয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে

  • অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সরকারি পর্যায়ে কঠোর নীতিমালা ও নজরদারি প্রয়োজন

অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থার অন্যতম বড় আশীর্বাদ। এই আশীর্বাদকে অভিশাপে পরিণত হতে না দিতে এখনই সচেতন হওয়া দরকার।

তুমি কি চাও এই লেখা আরও ছোট করে এক পাতায় প্রকাশযোগ্য বানিয়ে দিই?

Advertisement
Advertisement

আরো পড়ুন  


Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531