
শাওন
ঢাকা: সৎ মা নিশি ইসলামের দায়ের করা মামলায় অভিনেত্রী ও গায়িকা মেহের আফরোজ শাওনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর প্রথম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই আদেশ দেন, যা বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রকাশ্যে আসে।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, শাওন তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী এবং সৎ মা নিশি ইসলামকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছেন। এতে শাওন ছাড়াও সাবেক ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদসহ মোট ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ সদস্যদের স্বীকারোক্তি ও আদালতের সিদ্ধান্ত
মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে হাজির হন বাড্ডা থানার দুই পুলিশ সদস্য। তারা আদালতে স্বীকার করেন যে, তৎকালীন ওসির নির্দেশে তারা বাদী নিশি ইসলামকে আটক ও নির্যাতন করেন। তবে এইদিন শাওন, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুনসহ অন্যান্য আসামিরা আদালতে অনুপস্থিত থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
বাদীর বক্তব্য ও অভিযোগ
আদালতের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে বাদী নিশি ইসলাম বলেন, "আমরা চাই আসামিদের শাস্তি হোক। শাওন এই মামলায় অনেক প্রভাব বিস্তার করেছে। সে আমাদের মারধর করেছে।"
তিনি অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের শুরুর দিকে শাওনের বাবা মোহাম্মদ আলী একটি ম্যারেজ মিডিয়ায় পাত্রী খোঁজার বিজ্ঞাপন দিলে সেখান থেকেই তার সঙ্গে পরিচয় ও পরে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের খবর জানার পর মেয়ে শাওন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর বাবার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান এবং নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিশিকে ৬ মাসের জন্য জেলেও পাঠান।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, শাওন তার বাবাকে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ প্রমাণ করে দীর্ঘদিন একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আটকে রাখেন। এসব কর্মকাণ্ডে শাওনের ভাইবোনেরাও যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করেন নিশি ইসলাম।
মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ
আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকরের পরপরই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মামলাটি এখন সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই মামলার অগ্রগতি ও বিচার কার্যক্রম পরবর্তীতে কী মোড় নেয়, তা নিয়ে দেশবাসীর দৃষ্টি এখন আদালতের দিকে।