ঢাকা,  রোববার
০৬ এপ্রিল ২০২৫

Advertisement
Advertisement

উইন্ডোজ-১০ এর সমর্থন শেষ, ভাগাড়ে যেতে পারে ২৪ কোটি পিসি: বাড়ছে বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্য সংকট

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ৫ এপ্রিল ২০২৫

উইন্ডোজ-১০ এর সমর্থন শেষ, ভাগাড়ে যেতে পারে ২৪ কোটি পিসি: বাড়ছে বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্য সংকট

কম্পিউটার

২০২৫ সালের ১৪ অক্টোবরের পর উইন্ডোজ-১০ এর জন্য আর কোনো সফটওয়্যার আপডেট, নিরাপত্তা সংশোধনী কিংবা কারিগরি সহায়তা দেবে না মাইক্রোসফট, এমন ঘোষণায় প্রযুক্তি জগতে নেমে এসেছে উদ্বেগ। কারণ, উন্নত হার্ডওয়্যার ছাড়া উইন্ডোজ-১১ তে আপগ্রেড সম্ভব নয়, আর তাতে পুরোনো মডেলের অন্তত ২৪০ মিলিয়ন পিসি অচল হয়ে পড়তে পারে, যেগুলো শেষমেশ ইলেকট্রনিক বর্জ্য (ই-বর্জ্য) হিসেবেই ভাগাড়ে ঠাঁই পেতে পারে।

হার্ডওয়্যার সীমাবদ্ধতায় বিপাকে কোটি কোটি ব্যবহারকারী

উইন্ডোজ-১১ চালাতে হলে টিপিএম ২.০ চিপ, ৮ম প্রজন্মের প্রসেসর, ৪ জিবি র‍্যাম এবং ৬৪ জিবি স্টোরেজসহ উন্নত হার্ডওয়্যার প্রয়োজন। এই প্রযুক্তিগত বাধা পেরোনো অনেক পুরোনো ডিভাইসের জন্য প্রায় অসম্ভব বা আর্থিকভাবে অযৌক্তিক। ক্যানালিস রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের মোট উইন্ডোজ-১০ চালিত পিসির প্রায় ২০ শতাংশ বিপদে পড়বে।

পরিবেশের জন্য বড় হুমকি

এই ২৪ কোটি পিসি ফেলে দেওয়া হলে প্রায় ৪.৮ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য তৈরি হবে—যা ৩ লাখ ২০ হাজার গড় ওজনের গাড়ির সমান। সিসা, পারদ, ক্যাডমিয়াম ও বিষাক্ত ব্রোমিনযুক্ত উপাদানযুক্ত এই ই-বর্জ্য যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না পায়, তবে তা মাটি, পানির স্তর ও বাতাসে ভয়ংকর দূষণ ঘটাতে পারে।

বিকল্প কী?

কিছু ব্যবহারকারী হয়তো লিনাক্স মিন্ট বা উবুন্টুর মতো হালকা ও বিনামূল্যের অপারেটিং সিস্টেম বেছে নিতে পারেন। আবার অনেকে ঝুঁকি নিয়ে উইন্ডোজ-১০ চালিয়ে যাবেন, যদিও এটি নিরাপত্তাহীন। কিছু দেশ পুনর্ব্যবহার কর্মসূচি চালু রাখলেও বিশ্বব্যাপী ই-বর্জ্যের পুনর্ব্যবহার হার মাত্র ১৫–২০ শতাংশ, যা এই সংকট মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট নয়।

মাইক্রোসফটের নীতির সমালোচনা

কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও, মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ-১১ চালুর সময় উন্নত হার্ডওয়্যার প্রয়োজনীয়তা আর উইন্ডোজ-১০ এর সমর্থন শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। সমালোচকেরা বলছেন, নতুন পিসি বিক্রি বাড়াতে গিয়ে মাইক্রোসফট এক বিপুল ই-বর্জ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে, যার খেসারত দিতে হবে পরিবেশ ও ব্যবহারকারী উভয়কেই

সামনে কী?

এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভবিষ্যতে প্রয়োজন ব্যবহারকারীদের সচেতনতা, কার্যকর পুনর্ব্যবহার অবকাঠামো এবং বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর দায়বদ্ধ সিদ্ধান্ত। অন্যথায়, ই-বর্জ্য সমস্যা একটি বৈশ্বিক পরিবেশ সংকটে রূপ নিতে পারে, যা শুধু প্রযুক্তির নয়, মানবজাতির জন্যও দীর্ঘমেয়াদি হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531