এক সময় নদী-নালা, খাল-বিল বা পুকুরেই পাওয়া যেত শিং মাছ। কিন্তু এখন এই মাছ চাষ হচ্ছে ব্যাপকভিত্তিতে। ফলে সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায় এই জিওল মাছ। যা রোগীর খাদ্য হিসেবে রয়েছে প্রচুর চাহিদা।
জ্বর বা অসুস্থতার সময় শিং মাছ খেলে কি সত্যিই শরীরে শক্তি বাড়ে বা কোনো উপকারিতা আছে, নাকি এটা মিথ? এ বিষয়ে এএমজেড হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেডের পুষ্টি, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস ও মেটাবলিক ডিজিজ কনসালটেন্ট ডা. মো. জয়নুল আবেদীন দীপু ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
ডা. জয়নুল আবেদীন দীপু বলেন, অসুস্থতার সময় অন্যান্য যেকোনো মাছের মতোই শিং মাছ খেলেও শক্তি বাড়ে। শিং মাছ অন্যান্য মাছের মতোই প্রোটিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ। তবে শিং মাছে অন্যান্য মাছের তুলনায় শক্তির উপাদান বেশি আছে, বিষয়টা এমন নয়।
আরেকটি কথা প্রচলিত আছে। শিং মাছ খেলে শরীরে বেশি রক্ত উৎপন্ন হয়। কিন্তু এমন ধারনা সঠিক নয়। বরং লাল শাক, কচু শাক, কচুর লতি, প্রাণীর কলিজাতে বেশি পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্তের উৎপাদন বাড়াতে পারে। সেই হিসেবে শিং মাছকে শক্তির কিংবা লোহিত কণিকা উৎপাদনের বিশেষ উৎস হিসেবে ধরাকে মিথই বলা যায়।
শিং মাছের পুষ্টিগুণ
ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রতি ১০০ গ্রাম শিং মাছে পুষ্টিগুণের মধ্যে ক্যালরির পরিমাণ থাকে ১২০ কিলোক্যালরি। ২৮ কিলোক্যালরি ফ্যাট, ৯১ দশমিক ৫০ কিলোক্যালরি প্রোটিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া ভিটামিন এ থাকে ৪৯ দশমিক ৬০ আইইউ এবং ভিটামিন ডি এর পরিমাণ ১৯৭ আইইউ। ২২১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৮৬ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১১৪ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম এবং ২ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায় শিং মাছে। ম্যাঙ্গানিজের পরিমাণ ০ দশমিক ৩০ মিলিগ্রাম। কার্বহাইড্রেট নেই বললেই চলে শিং মাছে।
শিং মাছের উপকারিতা কি, এ বিষয়ে ডা. জয়নুল আবেদীন বলেন, শিং মাছ খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর মাছ। প্রোটিন, ভালো ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলস এ ভরপুর এই মাছ। তাই দৈনন্দিন প্রোটিনের চাহিদা পূরণে এই মাছ খাদ্য তালিকায় থাকা উচিত।