বর্ষাকাল চলছে। এ ঋতুতে তীব্র গরম থেকে খানিকটা স্বস্তি মিললেও শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় কারও কারও হাত-পায়ের চামড়া ওঠার সমস্যা প্রকট হয়। বিশেষ করে যারা দীর্ঘ সময় পানি সংক্রান্ত কাজ যেমন– থালাবাটি-বাসনকোসন পরিষ্কার, কাপড় ধোয়া ও অন্যান্য কাজ করেন, তাদের চামড়া ওঠার সমস্যা বেশি দেখা দেয়। বারবার বৃষ্টিতে ভিজলে, জমে থাকা পানিতে হাঁটলেও ত্বক নরম হয়। নরম ত্বক থেকে কিংবা ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে এ সমস্যা হতে পারে।
শিওরসেল মেডিকেল বাংলাদেশের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন জানান, হাত-পায়ের চামড়া ওঠার পেছনে অনেক কারণ আছে। যাদের ত্বক বেশি শুষ্ক, তাদের ত্বকে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে, বিশেষ করে শীতে হাত-পায়ের চামড়া ওঠে। ঝুম বৃষ্টির পর শীতল আবহাওয়া বিরাজ করে। তখনও কারও কারও এ সমস্যা হতে পারে।
ইরিন জানান, সঠিকভাবে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলে সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কাপড় ধোয়া, থালা-বাসন ধোয়ার জন্য যে ধরনের ডিটারজেন্ট বা ডিশওয়াশার ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর ক্ষার থেকেও চামড়া উঠতে পারে। অনেক ধরনের পণ্য যেমন লিকুইড সাবান, বডিওয়াশ ইত্যাদির ঘ্রাণ থেকে অ্যালার্জি হলেও চামড়া উঠতে পারে। চর্মরোগজনিত কারণেও চামড়া উঠতে পারে। যাদের এটোপিক ডার্মাটাইটিস, হ্যান্ড একজিমা আছে তাদেরও চামড়া ওঠে। ফাঙ্গাল ইনফেকশন, সোরিয়াসিসের কারণেও হাত-পায়ের চামড়া ওঠে।
সমাধানে কী করবেন:
হাত-পায়ের চামড়া ওঠা প্রতিরোধে মাইল্ড সাবান দিয়ে হাত-পা ধুতে হবে। অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান এড়িয়ে চলতে হবে। খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা পানিতে হাত-পা ধোয়া যাবে না।
নরমাল পানিতে হাত ধুয়ে ভালো করে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। ২০ সেকেন্ড ধরে ম্যাসাজ করে ময়েশ্চারাইজার লাগালে উপকার মিলবে।
হাত-পায়ের ত্বক সুন্দর রাখতে পেট্রোলিয়াম জেলি, লিপ অয়েল, অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে পা ভিজলে বাইরে থেকে ফিরে যত্ন নিন। কুসুম গরম পানিতে লবণ, লেবুর রস মিশিয়ে নিন। ১০ মিনিট হাত-পা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর আলতোভাবে ঘষে
ধুয়ে ফেলুন। তোয়ালে দিয়ে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগালে ত্বক ভালো থাকবে।
ত্বক মসৃণ রাখতে তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
হাত-পা কখনোই ভেজা রাখবেন না। কাজ শেষে হাত-পা ধুয়ে, তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলুন। ঘুমানোর আগে গ্লিসারিন কিংবা পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে ঘুমান।
খাদ্যতালিকায় ভিটামিন সি, এ, ই, প্রোটিন ও আয়রন জাতীয় খাবার রাখুন।
যদি একজিমা কিংবা ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে চামড়া ওঠে, তাহলে সে অনুসারে চিকিৎসা নিন। সাধারণত একজিমা হলে চিকিৎসকরা স্টেরয়েড দিয়ে থাকেন। ইমোলিয়েন্ট
জাতীয় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে বলেন। এরপরও যদি সমস্যা থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।