সকালের ব্যায়াম
আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনি। কিডনির দীর্ঘমেয়াদি রোগে বড্ড দুর্ভোগ। একটা পরিবারের স্বপ্নগুলো ডালপালা মেলতে শুরু করার আগেই ভেঙে যেতে পারে এমন জটিল রোগে। কখনো ভেবে দেখেছেন, কী করলে কিডনির রোগ থেকে বাঁচা যায়? সকালের কোনো ছোট্ট অভ্যাসে কি কিডনি ভালো থাকবে? জেনে নেওয়া যাক আজ।
সাধারণভাবে আমরা জানি, কিডনি ভালো রাখতে ঠিকঠাকভাবে পানি পান করা প্রয়োজন। তবে এর মানে কিন্তু এই নয় যে আপনি দিনভর গ্লাসের পর গ্লাস পানি পান করবেন কিংবা সকালে উঠেই ভরপেট পানি খেয়ে নেবেন। বরং খুব সাধারণ ও সহজ কিছু অভ্যাস আপনার কিডনির কার্যকারিতা ঠিক রাখতে সহায়তা করবে। এমন কিছু অভ্যাসের চর্চাই নাহয় করুন রোজ সকালে। এ সম্পর্কে জানালেন কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. লাবীবা ফারিয়া।
এক গ্লাস পানি
সকালটা আপনি শুরু করতে পারেন এক গ্লাস পানি দিয়ে। তাতে সারা দিনের পানির একটা অংশ পূরণ হয়ে যায় সকালবেলাতেই। তবে একেবারে ধরাবাঁধা নিয়মে পরিপূর্ণ এক গ্লাস পানিই যে খেতে হবে, তা-ও কিন্তু নয়। কিছুটা কম খেলেও ক্ষতি নেই। মূল বিষয়টা হলো, সকালেই আপনি এমন একটা কাজ করছেন, যাতে আপনার দেহে পানির ঘাটতি না হয়। পানির ঘাটতি হচ্ছে কি না, তা আপনি বুঝতে পারবেন প্রস্রাব করার সময়। হালকা হলদে রঙের প্রস্রাব হলে বুঝবেন, পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে ঠিকঠাক। গাঢ় প্রস্রাব বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া পানিশূন্যতার লক্ষণ।
স্বাস্থ্যকর নাশতা
সকালের নাশতা হোক স্বাস্থ্যকর। এমন খাবার খাবেন, যাতে লম্বা সময় ক্ষুধা না পায়। তাতে ওজন ও রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন অবশ্যই। গোটা শস্যের (অর্থাৎ রিফাইনড বা পরিশোধিত নয়) তৈরি খাবার বেছে নিন, খেতে পারেন লাল আটার রুটি। আঁশসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারও খান। মিষ্টি খাবার এবং মিষ্টি পানীয় এড়িয়ে চলুন। বাড়তি লবণ বর্জন করুন।
শরীরচর্চা
সকালেই শরীরচর্চা করতে পারেন। তাতে সারা দিনের খুব জরুরি একটা কাজ করা হয়ে যাবে। শরীরচর্চার অভ্যাস আপনার ওজন, রক্তচাপ ও রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। সব মিলিয়ে আপনার কিডনিও সুস্থ থাকবে।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ
মনের চাপে দেহ নানাভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মানসিক চাপ আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই চাপ সামলাতে কিন্তু নিজেকে সকাল সকালই প্রস্তুত করে তুলতে পারেন আপনি। সকালের স্নিগ্ধ পরিবেশে যোগব্যায়াম ও ধ্যানের চর্চা করতেই পারেন। মানসিক চাপ সামলানোর ব্যায়াম করতে পারেন এই সময়। প্রকৃতির বুকে শান্তি পেতে পারেন। প্রশান্তিদায়ক শব্দের মাঝে খানিকটা সময় কাটাতে পারেন। এমনকি ডিজিটালমাধ্যমেও এমন শব্দের মূর্ছনা সৃষ্টি করতে পারেন। এই যেমন, বৃষ্টির শব্দ বা পাখির ডাক আপনি শহুরে বাড়ির অন্দরেও শুনতে পারেন ডিজিটাল যন্ত্রের সহায়তায়।
‘আমি হব সকালবেলার পাখি’
সকাল সকাল ওঠার অভ্যাস করুন। তাহলে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা সহজ হবে। কাজের তাড়া আছে বলে প্রস্রাব চেপে রাখলেন, এমনটা যেন না হয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে কোনো আপস নয়। সকালে আগেভাগে উঠতে পারলে আপনি কাজের জায়গায় পৌঁছানোর সময় কিছু পথ হেঁটেও যেতে পারবেন। এমন অভ্যাসে সার্বিকভাবেই সুস্থ থাকা সহজ।