
মৃত্যু নিবন্ধন
পরিবারে শিশুর জন্ম হলে আমরা জন্মনিবন্ধন করি, যা পরিচয়ের অন্যতম প্রমাণ। কিন্তু মৃত্যুনিবন্ধনও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা, পারিবারিক সম্পত্তির বণ্টন, পেনশন প্রাপ্তি, জমিজমা বা সম্পত্তির নামজারিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে মৃত্যুনিবন্ধন প্রয়োজন হয়।
মৃত্যুনিবন্ধন কোথায় করবেন?
মৃত্যুনিবন্ধন করতে হলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে আবেদন করতে হয়। এ ছাড়া অনলাইনে bdris.gov.bd/dr/application লিংকের মাধ্যমে আবেদন করা যায়।
যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন
মৃত্যুনিবন্ধনের জন্য নিম্নলিখিত কাগজপত্র প্রয়োজন হয়:
-
মৃত ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি
-
মৃত ব্যক্তির স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা
-
মৃত্যুর তারিখ ও স্থান
-
লাশ দাফন বা সৎকারসংক্রান্ত প্রমাণপত্র
-
মৃত্যু হাসপাতালে হলে হাসপাতালের ছাড়পত্র ও মৃত্যুসনদ
-
অপঘাতে মৃত্যু হলে থানার প্রতিবেদন বা প্রয়োজনীয় কাগজ
-
আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন নম্বর
জন্মনিবন্ধন কেন জরুরি?
মৃত্যুনিবন্ধন করতে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করতে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজন হয়। যদি জন্মনিবন্ধন না থাকে, তবে অনলাইনে প্রথমে জন্মনিবন্ধন করতে হবে।
ঠিকানার তথ্য কেন প্রয়োজন?
মৃত্যুনিবন্ধন সনদ মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকার শনাক্তকরণের গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি নিশ্চিত করতে পানি, বিদ্যুৎ বা টেলিফোন বিলের কপি জমা দেওয়া যেতে পারে।
মৃত্যুর প্রমাণপত্র
মৃত্যুর তারিখ, স্থান এবং কারণ নিশ্চিত করতে উপযুক্ত প্রমাণপত্র দিতে হয়। প্রয়োজনে:
-
চিকিৎসকের প্রত্যয়নপত্র
-
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন
-
লাশ দাফন বা সৎকারের রসিদ জমা দিতে হবে।
আবেদনকারীর তথ্য
মৃত্যুসনদ শুধু বিশ্বস্ত ব্যক্তি বা মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়রা আবেদন করতে পারেন। আবেদনকারীর তথ্য হিসেবে জন্মনিবন্ধন নম্বর, মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা জমা দিতে হয়।
মৃত্যুনিবন্ধন ফি
-
৪৫ দিনের মধ্যে আবেদন করলে: ফি নেই
-
৪৫ দিন পর থেকে ৫ বছরের মধ্যে: ২৫ টাকা ফি দিতে হয় (স্থানীয় অফিসে বা বিকাশের মাধ্যমে)।
মৃত্যুনিবন্ধন শুধু আইনি প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক দায়িত্বও। সঠিক সময়ে মৃত্যুনিবন্ধন করলে ভবিষ্যতে অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।