
শিশুর মাথাব্যাথা
বড়দের মতো শিশুরও মাথাব্যথা হতে পারে। এটি একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে শিশু ও বয়স্কদের মাথাব্যথার মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। শিশুর মাথাব্যথা সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয় না এবং অনেক সময় এক-আধ ঘণ্টার মধ্যেই সেরে যায়। তবে শিশুর মাথাব্যথার সঙ্গে বমি ও বমি ভাবের মাত্রা বয়স্কদের তুলনায় বেশি দেখা যায়।
মাথাব্যথার কারণ
শিশুর মাথাব্যথার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন—
✅ অতিরিক্ত গরমে থাকা
✅ বদহজমজনিত সমস্যা বা অস্বস্তি
✅ ঘুমের অভাব
✅ দীর্ঘসময় মোবাইল বা টিভির পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকা
✅ স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা
✅ চোখের সমস্যা (যেমন, পড়ার সময় চোখ দিয়ে পানি পড়া, বই চোখের কাছে টেনে নেওয়া ইত্যাদি)
অনেক শিশু আবার স্কুল ফাঁকি দেওয়ার জন্যও মাথাব্যথার অজুহাত দেয়। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর অসুখের কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে, যেমন— মাইগ্রেন, সাইনোসাইটিস, ব্রেইন টিউমার বা মৃগী রোগ (এপিলেপ্সি)।
প্রতিকার ও করণীয়
✔ রোদজনিত মাথাব্যথা: অনেক শিশু রোদ সহ্য করতে পারে না। স্কুলে পিটি বা অ্যাসেম্বলির সময় মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুকে ছাতা, ক্যাপ ইত্যাদি ব্যবহারে উৎসাহিত করা উচিত। প্রয়োজনে অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে শিক্ষককে বিষয়টি জানাতে পারেন।
✔ চোখের সমস্যা: মাথাব্যথার সঙ্গে চোখে সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
✔ চিকিৎসকের পরামর্শ: শিশুর যদি দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা হয়, তাহলে চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ, নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
✔ ওষুধ সেবন: চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল বা ব্যথার ওষুধ না খাওয়ানোই ভালো।
শেষ কথা
শিশুর মাথাব্যথাকে সাধারণ মনে করে অবহেলা করা ঠিক নয়। এটি কোনো গুরুতর সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই যদি মাথাব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা নিয়মিত হতে থাকে, তবে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
✍ লেখক: অধ্যাপক, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট