
ক্যানসার রোগ
পবিত্র রমজান মাসে অনেক ক্যানসার রোগী রোজা রাখতে চাইতে পারেন। তবে তাঁদের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, কারণ রোজার সময় খাদ্যাভ্যাস ও দৈনন্দিন রুটিন পরিবর্তিত হয়, যা শারীরিক অবস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
রোজা রাখা কি নিরাপদ?
রোজা রাখা ক্যানসার রোগীর শারীরিক অবস্থা ও চলমান চিকিৎসার ওপর নির্ভর করে।
✅ রোজা রাখতে পারেন: যদি রোগী রেমিশনে থাকেন বা চিকিৎসা শেষ হয়ে থাকে এবং শারীরিক অবস্থা ভালো থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শে রোজা রাখা যেতে পারে।
❌ রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ:
- কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি চলাকালীন রোজা রাখা বিপজ্জনক হতে পারে, কারণ এতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বমিভাব, ডিহাইড্রেশন ও রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে।
- মেটাস্ট্যাটিক (স্টেজ ৪) বা জটিল অবস্থা থাকলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টি ব্যবস্থাপনা
✔ সাহ্রি: সহজপাচ্য কার্বোহাইড্রেট (ভাত, রুটি), প্রোটিন (ডিম, মাছ, মুরগি), স্বাস্থ্যকর চর্বি (বাদাম, অলিভ অয়েল) ও প্রচুর পানি পান করা উচিত।
✔ ইফতার: প্রোটিনযুক্ত খাবার, পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফলমূল গ্রহণ করা দরকার। অতিরিক্ত চিনি ও প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলতে হবে।
✔ পানির পরিমাণ: ডিহাইড্রেশন এড়াতে ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা
- কেমোথেরাপি বা অন্যান্য চিকিৎসা চলাকালীন রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।
- কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (বমি, ডায়রিয়া, মুখে ঘা) থাকলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা কঠিন হতে পারে।
- ব্যথানাশক বা অন্যান্য ওষুধ ইফতার ও সাহ্রির মধ্যে কীভাবে গ্রহণ করা যাবে, তা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরি
রোজা রাখার আগে অবশ্যই অনকোলজিস্ট বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- যদি চিকিৎসক মনে করেন যে রোজা রাখা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে, তবে ইসলামিক বিধান অনুযায়ী অসুস্থ ব্যক্তির জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক নয়।
লেখক:
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী,
প্রফেসর অব মেডিসিন ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট, মেডিকেল অনকোলজি,
আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল, উত্তরা।