ঢাকা,  শুক্রবার
১৪ মার্চ ২০২৫

Advertisement
Advertisement

কিডনির রোগ বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে: প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা

প্রকাশিত: ১৪:৪৯, ১৩ মার্চ ২০২৫

আপডেট: ১৫:১০, ১৩ মার্চ ২০২৫

কিডনির রোগ বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে: প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা

কিডনি

বিশ্বজুড়ে কিডনির রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে, বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। এ রোগ শুধু ব্যক্তির জীবন বিপর্যস্ত করে না, বরং পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপরও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে।

বিশ্বে প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ কিডনির রোগে আক্রান্ত, আর বাংলাদেশে এ সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ। প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার রোগী ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভরশীল হন, এবং ২৪-৩০ হাজার রোগী হঠাৎ কিডনি বিকল হয়ে সাময়িক ডায়ালাইসিস নিতে বাধ্য হন। অন্য অনেক রোগের তুলনায় কিডনি বিকল হওয়ার চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

কিডনি রোগের কারণ

কিডনি রোগের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—
? অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ
? স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
? ধূমপান ও ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার
? জন্মগত বা বংশগত কিডনির রোগ
? মূত্রতন্ত্রের সংক্রমণ ও কিডনিতে পাথর

এগুলোর বেশির ভাগই প্রতিরোধযোগ্য, যদি সচেতন জীবনধারা অনুসরণ করা হয়।

কিডনি রোগের লক্ষণ

প্রাথমিক পর্যায়ে ৭০-৯০% কিডনি নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তবে কিছু উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে—
✔ প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা রঙ পরিবর্তন
✔ পা, চোখের নিচে বা গোড়ালিতে ফোলা ভাব
✔ অবসাদ, শ্বাসকষ্ট, বমি ভাব
✔ ত্বকে চুলকানি, রাতে বারবার প্রস্রাব
✔ প্রস্রাবে ফেনা বা রক্ত, তলপেটে ব্যথা

শিশুদের জন্মগত কিডনি সমস্যা আছে কি না, তা প্রথমেই পরীক্ষা করা জরুরি।

প্রতিরোধের উপায়

কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হলে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনই একমাত্র উপায়, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে সচেতন জীবনযাত্রার মাধ্যমে ৭০% কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা বছরে দুইবার এই পরীক্ষা করুন:

✅ প্রস্রাবে আমিষ যাচ্ছে কি না
✅ রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা

যাঁরা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপায়ী, অতিরিক্ত ওজনযুক্ত, দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ সেবন করেছেন বা ৪০ বছরের বেশি বয়সী—তাঁদের কিডনি পরীক্ষা করা উচিত।

সুস্থ জীবনধারার ৮টি চর্চা

✅ প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম ও সচল থাকা
✅ পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ
✅ ধূমপান ও মাদক পরিহার
✅ ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা
✅ কিডনির কার্যকারিতা ছয় মাস অন্তর পরীক্ষা করা
✅ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক ও অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করা
✅ পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করা
✅ পানিশূন্যতা এড়িয়ে চলা

ডা. এম এ সামাদ,
অধ্যাপক, কিডনি রোগ বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /home/dikdorshon/public_html/details.php on line 531