
লিভার
লিভার মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শুধু হজমে সাহায্য করে না, রক্ত পরিশোধন, বিপাকক্রিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু আমাদের কিছু বদঅভ্যাস লিভারের মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। লিভার সুস্থ রাখতে নিচের ১০টি সহজ নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি:
-
লো ফ্যাট ফুড থেকে সাবধান:
সুপারমার্কেটের ‘লো ফ্যাট’ বা ‘৯৯% লো ইন ফ্যাট’ লেখা খাবার এড়িয়ে চলুন। এসব খাবারে ফ্যাট কমানো হলেও স্বাদ বাড়াতে অতিরিক্ত চিনি যোগ করা হয়, যা লিভারের জন্য ক্ষতিকর। -
স্ট্রেসে খাবেন না:
মানসিক চাপে খাবার খাওয়ার অভ্যাস লিভারের ক্ষতি করতে পারে। স্ট্রেসের সময় হজম ঠিকমতো হয় না, ফলে খাবার ঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত হয় না। -
হার্বাল চিকিৎসা গ্রহণ করুন:
কিছু ভেষজ গাছের মূল ও উপাদান লিভার পরিষ্কার ও সুস্থ রাখতে কার্যকর। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এসব হার্বাল সাপোর্ট গ্রহণ করুন। -
সঠিক সাপ্লিমেন্ট বেছে নিন:
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। সাপ্লিমেন্ট বাছার সময় লিভার ডিটক্সে সহায়ক কিনা তা দেখে নিন। -
ওষুধ গ্রহণে সচেতনতা:
কিছু ওষুধ, বিশেষ করে কিছু পেইনকিলার (যেমন টাইলেনল) ও কোলেস্টেরলের ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে। এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করবেন না। -
কফির উপকারিতা:
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন কফি খাওয়ার মাধ্যমে লিভারের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ১৪% পর্যন্ত কমে যায়। -
টক্সিন থেকে দূরে থাকুন:
ত্বকে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান রক্তে মিশে লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই স্প্রে বা বিষাক্ত কেমিক্যাল এড়িয়ে চলা উচিত। -
প্লান্ট প্রোটিন গ্রহণ করুন:
প্রাণীজ প্রোটিনের পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন গ্রহণ করুন। ডাল, বাদাম, শাকসবজি ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার লিভারের জন্য উপকারী। -
হেলদি ফ্যাট খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন:
অলিভ, ওয়ালনাট ইত্যাদির মতো খাবারে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়। ফ্যাট একেবারে বাদ না দিয়ে উপকারী ফ্যাট বেছে নিন। -
বাতাবি লেবুর উপকারিতা:
বাতাবি লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে কোষ সুরক্ষায় সাহায্য করে। এটি ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কার্যকর।
লিভার সুস্থ রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন অনুশীলন জরুরি। এসব নিয়ম মেনে চললে লিভার দীর্ঘদিন সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকবে। আপনার ছোটখাটো সচেতনতা আজ লিভার রক্ষার বড় পদক্ষেপ হয়ে উঠতে পারে।