
হাঁটা শুধু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া নয়; এটি শারীরিক সুস্থতা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ঘুমের মান উন্নয়ন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের এক কার্যকরী মাধ্যম। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, নিয়মিত হাঁটলে মেজাজ ভালো থাকে এবং বিষণ্নতার লক্ষণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়।
গবেষণাটি বলছে, প্রতিদিন যারা কমপক্ষে ৭,৫০০ কদম হাঁটেন, তাঁদের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ ৪২ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। শুধু তাই নয়, দিনে ৫,০০০ কদমের বেশি হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুললে হতাশা ও বিষণ্নতার ঝুঁকি কমে আসে। প্রতিদিন ১,০০০ কদম বাড়ানোর মাধ্যমেও বিষণ্নতার সম্ভাবনা অনেকটাই হ্রাস পায়।
হাঁটার মানসিক উপকারিতা শুধু হাঁটার পরিমাণে সীমাবদ্ধ নয়, এটি নির্ভর করে কোথায় এবং কোন পরিবেশে হাঁটছেন তার ওপরও। প্রকৃতির সান্নিধ্য যেমন সবুজ পার্ক, লেক বা সমুদ্রের ধারে হাঁটা মনকে আরও বেশি প্রশান্তি দেয় ও মেজাজ উন্নত করে। হাঁটার সময় শরীর থেকে ‘এনডোরফিন’সহ নানা সুখদায়ক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মানসিক চাপ হ্রাস করে ও মনকে ভালো রাখে।
হাঁটা এমন এক ব্যায়াম যা বেশিরভাগ মানুষ নিরাপদে করতে পারেন। এতে কোনো ব্যায়ামাগারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, না লাগে বিশেষ কোনো যন্ত্রপাতি। প্রতিদিন হাঁটার জন্য চাই শুধু একটু ইচ্ছাশক্তি ও কিছুটা সময়।
হাঁটার অভ্যাস গড়তে যা করতে পারেন:
-
প্রথমে ছোট লক্ষ্য নিন, যেমন দিনে ১,০০০ থেকে ২,০০০ কদম হাঁটা।
-
তারপর ধীরে ধীরে প্রতিদিন ৫০০ কদম করে বাড়ান।
-
লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহার করুন।
-
খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটুন।
-
বাজারে হেঁটে যান বা দোকানে গিয়ে গাড়ি দূরে পার্ক করে হাঁটুন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যারা বিষণ্নতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট ও সাইকোথেরাপির পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটা কার্যকর এক আচরণগত স্বাস্থ্যচর্চা হতে পারে।
সুতরাং, শুধু শরীর সুস্থ রাখতেই নয়, মনকে ভালো রাখতে প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। মাত্র ৭,৫০০ কদম হাঁটলে মিলতে পারে বিষণ্নতা থেকে মুক্তি, আর সঙ্গে মিলবে এক অনন্য মানসিক প্রশান্তি।