ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Advertisement
Advertisement

দিশেহারা ভোক্তা, দুই মাসে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছ ৮৭ শতাংশ  

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১০:৩৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

দিশেহারা ভোক্তা, দুই মাসে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছ ৮৭ শতাংশ  

ফাইল ছবি

সব কিছুর দাম বাড়ছে। গত দুই মাসের ব্যবধানে শুধু নিত্যপণ্য নয়, দুই দফা বেড়েছে বিদ্যুৎ, প্রাকৃতিক গ্যাস এলপি গ্যাসের দাম। নিত্যপণ্যের বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুই মাসের ব্যবধানে বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে থেকে ৮৭ শতাংশ। 

নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে মূল্যস্ফীতি, আর সে থেকে নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তের প্রতিদিনের জীবনে চাপ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি এবং খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রম  বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিবিএসের তথ্য মতে, বিদায়ী বছরের আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল .৫২ শতাংশ, তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা .৫৭ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ ছয় মাসের ব্যবধানে পণ্যের দাম বাড়ার গতি কমেছে .৯৫ শতাংশ। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি কমবে না বলে মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদরা, বরং তা বাড়তে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি  বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। দুই মাসের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৫৭ শতাংশ। এখন ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দাম ২৮ শতাংশ বেড়ে প্রতি কেজি এখন ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গত ২২ ডিসেম্বর ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, দুই মাসে ২২ শতাংশ দাম বেড়ে এখন তা ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চীনা আদার দাম ৮৭ শতাংশ বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। আর ৩০ শতাংশ দাম বেড়ে এখন তা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া দুই মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে রসুনের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এখন প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। দুই মাস আগে আমদানি করা রসুন প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। দুই মাসের ব্যবধানে দেশি রসুনের দাম ৭১ শতাংশ বেড়ে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা।

আগে থেকে বাড়তে থাকা চিনির দাম গত দুই মাসে বেড়েছে ১০ শতাংশ। বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। দেশি বলে পরিচিত চিকন মসুর ডাল কেজিতে শতাংশ দাম বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টিসিবির তথ্য বলছে, আমদানি করা রসুনে গত এক বছরে ৬২ শতাংশ দাম বেড়েছে। টিসিবির বাজারদরে অবশ্য একসঙ্গে দুই মাসের তথ্য নেই। গত মাসে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া আমদানি করা রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৯০ টাকায়। এক বছরে দেশি রসুনের দাম ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। দেশি রসুন প্রতি কেজি এখন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, এক মাস আগে ছিল ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।

গত এক বছরে দেশি আদার দাম ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, গত মাসে বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। টিসিবির তথ্যে জানা যায়, গত এক বছরে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ২৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এখন হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৫০ টাকায়, গত মাসে যা ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর মনে করেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো সুযোগ নেই। জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খাতে প্রভাব পড়েছে। তা ছাড়া শীতকালীন সবজির সরবরাহ কম হবে। নতুন ধান আসতে আরো তিন-চার মাস। সব মিলিয়ে এই পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো কারণ দেখছি না। বরং তা বাড়তে পারে, যদি সরবরাহ চেইন ঠিক না থাকে।

Advertisement
Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_05/p1kq0rsou/public_html/details.php on line 531